ক্ষুদিরাম স্মরণীয় কেন?
উত্তর : বিংশ শতকের প্রথম ভাগে নরমপন্থী আন্দোলনের পাশাপাশি বিপ্লবীরা সন্ত্রাসবাদী আন্দোলনের মাধ্যমে মাতৃভূমির মুক্তি সাধনে সচেষ্ট হন। স্বদেশী যুগে বাংলার বৈপ্লবিক আন্দোলনের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় কর্মী ছিলেন ক্ষুদিরাম বসু (১৮৮৯--১৯০৮ খ্রীঃ)। মেদিনীপুর জেলার সন্তান ক্ষুদিরাম কৈশোর বয়সে মেদিনীপুরের গুপ্ত বৈপ্লবিক সমিতির সংস্পর্শে আসেন এবং যুগান্তর গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত হন। কলকাতার চিফ প্রেসিডেন্সী ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ড যুগান্তর পত্রিকা ও তার সঙ্গে যুক্ত বিপ্লবীদের বিরুদ্ধে দমনমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করায় তাঁকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিংসফোর্ড ‘কসাই কাজী 'নামে কুখ্যাত ছিলেন। কিংসফোর্ডকে হত্যার দায়িত্ব দেওয়া হয় তরুণ বিপ্লবী ক্ষুদিরাম ও প্রফুল্ল চাকীর উপর। ১৯০৮ সালের ৩০শে এপ্রিল মজঃফরপুরে তারা কিংসফোর্ডের উপর বোমা নিক্ষেপ করতে গিয়ে ভুলবশত মিসেস কেনেডী ও তার কন্যাকে নিহত করেন। এরপর ধরা পড়ে গিয়ে ১৯০৮ সালের ১১ই আগস্ট ক্ষুদিরাম ফাঁসির মঞ্চে আত্মাহুতি দেন। ক্ষুদিরামের বলিদান সমগ্র বাংলায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। অগ্নিযুগের প্রথম শহিদ কিশোর ক্ষুদিরামের নির্ভীক দেশপ্রেম ও আত্মত্যাগ বিপ্লবীদের অনুপ্রেরণা জোগায় এবং বাংলার যুবসমাজকে বিপ্লবী মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ করে। বাংলা তথা মেদিনীপুর জেলার মানুষ সরকার বিরোধী আন্দোলন সামিল হয়। মাতৃভূমির মুক্তির জন্য তাঁর দুঃসাহসিক তৎপরতা দেশবাসী আজও কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করে।

0 Comments