দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধােত্তরকালে বাংলাদেশে ও কৃষক আন্দোলন ঘটে। বাংলার প্রধানমন্ত্রি ফজলুল হকের নিয়ােজিত ফ্লাউড কমিশন ভাগচাযী বা আধিয়ারদের উৎপন্ন শয্যের ২/৩ অংশ দেবার সুপারিশ করেছিল। ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গীয় প্রাদেশিক কৃষকসভা ফ্লাউড কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করার দাবীতে আন্দোলন শুরু করে। অজন্মা, দুর্ভিক্ষ, মজুদদারী, আর্থিক মন্দার প্রকোপে গ্রামের দরিদ্র কৃষকদের বেশির ভাগই জমি বিক্রি করে জোতদারের জমিতে ভাগচাষী বা বর্গাদারে পরিণত হয়েছিল। কোথাও কোথাও এই ভাগচাষীর সংখ্যা ৬০% পৌছেছিল। দারিদ্র্যের যন্ত্রনা, অসহায় অবস্থার
জন্য তে-ভাগা আন্দোলন শুরু হয় (১৯৪৬, নভেম্বর)। হাজী মহম্মদ দানেশ, নিয়ামত আলী, চারু মজুমদার-এর নেতৃত্বে দিনাজপুর, জলপাইগুড়ি, ময়মনসিংহ, রংপুর, মালদহ, যশােহর, ২৪ পরগনা, হাওড়া, মেদিনীপুর জেলার প্রায় ৭০,০০০০০ কৃষক-ক্ষেত মজুর ২/৩ অংশ ফসল দাবীর সপ্গে জমিদারী প্রথা উচ্ছেদ, বর্গাচাষীকে জমির মালিক হিসাবে স্বীকৃতির দাবী জানায়।
গুরুত্ব: মথন সারা দেশ সাম্প্রদায়িকতায় উন্মত্ত, তখন তথা কথিত অজ্ঞ, দরিদ্র কৃষকদের এই আন্দোলন ছিল নজীর বিহীন ঘটনা। জমিদারী প্রথা উচ্ছেদ, প্রজামত্ত আইন, বর্গাদার আইন প্রভৃতির পূর্বাভাস দিয়েছিল এই আন্দোলন যা বামপন্থী আন্দোলনের দিশারী ও পথিকৃৎ।

0 Comments