গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, সিন্ধু, গোদাবরী, কৃষ্ণা, কাবেরী, নর্মদা, তাপী প্রভৃতি
বড় বড় নদ-নদী
ছাড়াও ভারতের বিভিন্ন অংশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে অসংখ্য ছােট ছােট নদ-নদী। ছােট বড় মিলিয়ে এইসব অগণিত নদ-নদী সুদূর অতীত থেকে ভারতবাসীর জীবনধারার ওপর গভীরভাবে প্রভাব বিস্তার করে রয়েছে। শুধু হরপ্পা-মহেঞ্জোদাড়াের মতাে প্রাচীন সভ্যতা (সিন্ধুনদ তীরবর্তী) নয় বা এলাহাবাদ, বারাণসীর মতাে প্রাচীন ধর্মস্থান (গঙ্গা তীরবর্তী) নয় -আধুনিক ভারতের অধিকাংশ শহর, নগর, জনপদ গড়ে উঠেছে কোন না-কোন নদীর তীরে। জীবিকার ক্ষেত্রে দেখা যায়, বর্তমানে দেশের শতকরা প্রায় ৬০ থেকে ৭০ জন অধিবাসী কৃষিকাজের ওপর নির্ভরশীল। দেশের খাদ্য-বস্ত্রের উৎপাদন এবং অর্থনীতিও বহুলাংশে কৃষিনির্ভর। এত গুরুত্বপূর্ণ যে কৃষিকাজ, তার অধিকাংশ কেন্দ্রীভূত দেশের বিস্তীর্ণ নদী উপত্যকা গুলিকে। কতকগুলি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প যেমন কার্পাস বয়ন শিল্প, চিনি শিল্প, পাট শিল্প প্রভৃতি কৃষিভিত্তিক শিল্পগুলি পরােক্ষভাবে নদীর ওপর নির্ভরশীল। দেশের জলসেচ ব্যবস্থা, সামগ্রিক জলবিদ্যুৎ উৎপাদন, অভ্যন্তরীণ সুলভ জলপথে পরিবহন-ব্যবস্থা, পানীয় জলের যােগান প্রভৃতি ক্ষেত্রেও নদ-নদীর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। এইভাবে, ভারতের জীবনধারা এ-দেশের নদ নদী গুলির সঙ্গে এতই ওতপ্রােতভাবে জড়িত যে নদ-নদী গুলির বুকে কান পাতলে যেন ভারতেরই হৃদয়ের স্পন্দন শােনা যাবে। নদনদী গুলি যেন মায়ের মতাে সন্তানস্নেহে ভারতীয়দের লালন-পালন করে চলেছে, ভারতীয়দের জীবনধারাকে পরিপুষ্ট করে চলেছে। এজন্যই ভারতকে নদীমাতৃক দেশ বলে।

0 Comments