উত্তর: দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ভারতে ফিরে আসার (১৯১৫ খ্রিঃ) পর গান্ধিজি প্রথম বিহারের চম্পারণে নীল চাষীদের সমর্থনে সত্যাগ্রহ আন্দোলন শুরু করেন (১৯১৭ খ্রিঃ)। এখানে প্রতি বিঘায় তিন কাঠা নীলচাষ বাধ্যতামূলক ছিল। নীলকর সাহেবদের স্বাভাবিক শােষণ বজায় ছিল। স্থানীয় নেতা রাজকুমার শুক্লার আমন্ত্রণে রাজেন্দ্র প্রসাদ, মহাদেব দেশাই, আচার্য জে. বি. কৃূপালনী, মাজহাবুল হক প্রমুখ অনুগামী সহ গান্ধিজি চম্পারন পৌছলে স্থানীয় ইংরেজি কর্তৃপক্ষ তাদের বহিষ্কার করে। কিন্তু গান্ধিজি আন্দোলন চালাতে থাকেন। সরকার তাকে গ্রেপ্তার করে কিন্তু অল্পকাল পর মুক্তি দেয়। এক তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদন অনুসারে সরকার ‘তিন কাঠিয়া' ব্যবস্থা বন্ধ করে দেয়। খাজনার হার কমিয়ে দেয়। এভাবে চম্পারণ সত্যাগ্রহ সফল হয়।
চম্পারণ সত্যাগ্রহ ছিল ভারতে গান্ধিজির প্রথম সত্যাগ্রহ আন্দোলন। ভারতীয় কৃষকদের প্রকৃত অবস্থা সম্বন্ধে গান্ধিজির প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা লাভ হয়। এবং তাদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সাধারণের মধ্যে গান্ধিজির মাহাত্ম (Charisma) ছড়িয়ে পড়ে। তিনি অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী এই ধারনাও গড়ে ওঠে। গান্ধিজির জনসমর্থনের ভিত্তি গড়ে ওঠে। রমেশ চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, সর্বভারতীয় রাজনৈতিক নেতা হিসাবে গান্ধীর উত্থানের প্রথম পদক্ষেপ ছিল চম্পারন সত্যাগ্রহ (Tlie Chanpura incident way be regarded as the first stage in the emergency of Gandhi as the political leader of India) জুডিথ ব্রাউন গান্ধীজীর জনসংযােগের ক্ষেত্রে মধ্যস্থদের ভূমিকাকে গুরুত্ব দিলেও এবং হার্ডিম্যান তথ্যভিত্তিক সীমাবদ্ধতা দেখালেও চম্পারন সত্যাগ্রহ জাতীয়তাবাদের রূপান্তরে বিশিষ্ট অবদান রেখেছিল।

0 Comments