উত্তর: ভারতের দেশীয় রাজ্য হায়দ্রাবাদের একটি অঞ্চল হােল হায়দ্রাবাদের কৃষকদের অবস্থা আরও করুণ ছিল।
তেলেঙ্গানা। ব্রিটিশ শাসিত ভারতের তুলনায় দেশীয় রাজ্য তথা সামন্ততান্ত্রিক কাঠামােয় দেশমুখ, জায়গীরদারদের শােষণ, উৎপীড়ন ব্যবস্থা চালু ছিল। বেট বেগারি প্রথাও ছিল। এছাড়া তেলেগু, মারাঠি, কানাড়ি ভাষাভাষী হিন্দুরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও সংখ্যালঘু উর্দুভাষী মুসলিমরা জমির মালিকানা, মর্যাদা, কতৃত্বে প্রধান ছিল। এর প্রতিবাদে তেলেঙ্গানার কৃষকরা সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু করেন - যা 'তেলেঙ্গানা আন্দোলন নামে পরিচিত (১৯৪৬ খ্রিঃ)।
ইতিমধ্যে ভাষা আন্দোলনের জন্য গঠিত 'অন্ত্র মহাসভা', প্রজামণ্ডল ইত্যাদি সংগঠনের মাধ্যমে কমিউনিষ্টরা চড়া খাজনা, বেগার শ্ৰম প্রভৃতির বিরুধে গ্রামাণঞ্চলের কৃষকদের সংগঠিত করেছিল। খােলা বাজার থেকে বন্দুক ও গুলি বারুদ কিনে তারা ১০,০০০ স্বেচ্ছাসেবীর এক বাহিনী গড়ে তােলে।
কমিউনিষ্ট ক্মী ডােডিড কোমারা নিজের সামান্য জমি রক্ষা করতে গিয়ে জমিদারের হাতে নিহত হলে (৪ঠা জুলাই, ৪৬) নালকোন্ডা জেলার জনগাঁ, সূর্যপাত, হুজুর নগর তালুকে সংঘর্য শুরু হয়। পাশের জেলাগুলিতেও বিক্ষোভ সংঘর্ষ দেখা দেয়। কৃষকেরা নিজাম ও রাজাকার বিরােধী ধ্বনি দিয়ে জমির নথিপত্র ধ্বংস করার আহ্বান জানায়। ৩,০০০ গ্রামের ৩০,০০০০০ কৃষক এই আন্দোলনে অংশ নেয়। ১৬,০০০ বর্গমাইল স্থান মুক্তালে পরিণত হয়। এখানে বেগার শ্রম লোপ, জমি বিলি, মজুরী বৃদ্ধি, সেচের উন্নতি, সালিশী, অস্পৃশ্যতা ও কুসংস্কার দূরীকরণ প্রভৃতি গঠনমূলক কাজ হয়।

0 Comments