বৃদ্ধিপােষক হরমোনের যে কাজ রয়েছে তা নিম্নরূপ-
বৃদ্ধি পোষক হরমোন বা সােমাটোট্রফিক হরমোন (STH)-এর কাজ
অস্থিবৃদ্ধি: দেহে অস্থির অগ্রভাগে অবস্থিত তরুণাস্থি কলার কোশগুলির বিভাজন ঘটিয়ে ও তরুণাস্থির ধাত্রে ক্যালশিয়াম লবণ ও প্রােটিন অধঃক্ষিপ্ত করে অস্থির বৃদ্ধি ঘটায়।
দেহের অঙ্গ বৃদ্ধি : দেহের পেশী কলা, যকৃৎ, বৃক্ক, থাইমাস ইত্যাদির বৃদ্ধিতে STH অংশগ্রহণ করে।
বিপাকের ওপর ক্রিয়া: STH প্রােটিন সংশ্লেষে অংশগ্রহণ করে; রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বৃদ্ধি ঘটায়; প্লাজমায় লিপিডের পরিমাণ বৃদ্ধি করে, ফলে দেহে সঞ্চিত ফ্যাটের পরিমাণ কমে।
দেহে খনিজ পদার্থের পরিমাণ বৃদ্ধি: হরমােনটি দেহে। ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফেট, সোডিয়াম পটাশিয়াম প্রভৃতি আয়নের পরিমাণ বৃদ্ধি করে।
STH-এর ক্ষরণের তারতম্যে অসুস্থতা-
বামনত্ব বা ডোয়ারফিজম:
শিশু অবস্থায় STH-এর কম ক্ষরণে দেহের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়ে যে-অস্বাভাবিক অবস্থার সৃষ্টি হয়, তাকে বামনত্ব বা ডোয়ারফিজম বলে। উপসর্গ: দেহের দৈর্ঘ্য 3-4 ফুটের বেশি হয় না; দেহ অস্বাভাবিক মেদবহুল হয় এবং মুখে গোঁফদাড়ি হয় না মুখমণ্ডল ফোলা ফোলা হয়।
অতিকায়ত্ব বা জাইগ্যানটিজমঃ শিশু অবস্থায় STH-এর অধিক ক্ষরণে দেহের অত্যধিক বৃদ্ধির ফলে যে-অস্বাভাবিক অবস্থার সৃষ্টি হয়, তাকে অতিকায়ত্ব বা জাইগ্যানটিজম বলে.
উপসর্গ: দেহের উচ্চতা 7-8 ফুট হয়; রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
অ্যাক্রোমেগালি: প্রাপ্তবয়স্ক লােকের STH-এর ক্ষরণ বৃদ্ধি পেলে মুখের নীচের চোয়াল, হাত-পা ইত্যাদি বৃদ্ধি পায়, চামড়া মােটা হয় এবং দেহের আন্তরয়ন্ত্রীয় অঙ্গের বৃদ্ধিজনিত যে-অস্বাভাবিক অবস্থার সৃষ্টি হয়, তাকে অ্যাক্রোমেগালি বলে।
উপসর্গ: নীচের চোয়ালের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটে; হাত ও পায়ের আঙুলের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি ঘটে; মেরুদণ্ডের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ফলে দেহ কুঁজো হয়ে যায়; মুখ ও দেহের অন্যান্য স্থানের চামড়া মােটা হয়ে কুঁচকে যায়, ফলে গােরিলার মতাে দেখায়।
0 Comments