তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধ গুরুত্বপূর্ণ কেন?
• উত্তর: আফগানিস্তানের ঘুর রাজ্যের অধিপতি গিয়াসউদ্দিন ঘোরীর ভ্রাতা মহম্মদ ঘোরী দিল্লী ও আজমীরের চৌহান বংশের শাসক তৃতীয় পৃথ্বীরাজের সঙ্গে তরাইনের প্রান্তরে সংঘর্ষে অবতীর্ণ হন (১১৯১ খ্রীঃ)। রাজপুত চারণ কবি চঁাদ বরদই এর পৃথ্বীরাজ রাসো কাব্য গ্রন্থ থেকে জানা যায় এই সংঘর্ষের মূলে ছিল পৃথ্বীরাজ ও সংযুক্তা-র বিবাহ। পৃথ্বীরাজ কনৌজের গাহড়বাল বংশের রাজা জয়চন্দ্রের সুন্দরী কন্যা সংযুক্তাকে বলপূর্বক অপহরণ করেন এবং তার সঙ্গে পরিণয়ে আবদ্ধ হন। এই অপমানের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য জয়চন্দ্র মহম্মদ ঘোরীকে পৃথ্বীরাজের বিরুদ্ধে যুদ্ধে প্ররোচিত করেন। ১১৯১ খ্রীষ্টাব্দে প্রথম তরাইনের যুদ্ধে অবশ্য মহম্মদ ঘোরী পরাজিত হন। কিন্তু পর বৎসর (১১৯২ খ্রীঃ) মহম্মদ ঘোরী পুনরায় পৃথ্বীরাজের বিরুদ্ধে তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধে অবতীর্ণ হন। পৃথ্বীরাজ পরাজিত ও নিহত হলেন। এই যুদ্ধের ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম। ফলাফলের দিক থেকে তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, পৃথ্বীরাজের পরাজয় রাজপুত শক্তির উপর দারুণ আঘাত হানে এবং ভারতীয় প্রতিরোধ শক্তির দুর্বলতা প্রমাণিত করল। দ্বিতীয়ত, ভারতের অভ্যন্তরে মুসলমান অধিকার স্থাপিত হল এবং এই যুদ্ধে সাফল্যের পরেই উত্তর ভারতে মুসলমান রাজ্য বিস্তারের গতি ত্বরান্বিত হয়।
0 Comments