খলিফা ও সুলতানের সম্পর্ক :
Ans:
ইসলাম ধর্ম অনুসারে তাঁদের একজনই শাসক খলিফা। ফলে দিল্লির সুলতানির উপরেও খলিফারই অধিকার ছিল। যেহেতু মুসলমানরা বিশাল অঞ্চল জুড়ে শাসন করত, খলিফার পক্ষে সমগ্র অঞ্চল শাসন করা সম্ভব ছিল না। তাই খলিফার অনুমোদন নিয়ে নানান অঞ্চলে নানান ব্যক্তি শাসন করতেন। ভারতবর্ষের শাসক ছিলেন সুলতান। এমনিতে সুলতানরা খলিফাকে যে খুব মেনে চলতেন তা নয়, তবে কে সুলতান হবে তা নিয়ে গোলমাল হলে তাঁরা খলিফার শরণাপন্ন হতেন, খলিফা যাকে অনুমোদন দিতেন বাকিরা তা নাকচ করতে পারত না। এইভাবে ইলতুৎমিস যখন সুলতান হলেন বাকিরা তা মানতে চাইলেন না। তখন ইলতুৎমিস নানা উপহার পাঠিয়ে খলিফার অনুমোদন প্রার্থনা করেন, খলিফা অনুমোদন দেন। ১২২৯ খ্রিস্টাব্দে ইলতুৎমিস খলিফার অনুমোদন পান। সুলতানরা নিজেদের মুদ্রায় তাদের 'খলিফার প্রতিনিধি' বলে খোদাই করতেন। মুঘল বাদশাহরা ভারতের বাইরে কাউকে মর্যাদা ও ক্ষমতায় নিজেদের সমান বলে মনেই করতেন না। মধ্য এশিয়ার খুরের শাসন মুইজউদ্দিন মহম্মদ বিন সাম (মহম্মদ ঘুরি) রাজপুত রাজা পৃথ্বীরাজ চৌহানকে হারিয়ে দিল্লি দখল করেছিলেন। কুতুবউদ্দিন আইবকের সময়ে দিল্লিতে তুর্কি শাসন স্বাধীনভাবে বিকশিত হতে শুরু করে। ইলতুৎমিসের সময়ে দিল্লি সুলতানির সামনে তিনটি প্রধান সমস্যা ছিল। (১) সাম্রাজ্যের মধ্যে বিদ্রোহীদের দমন ; (২) মোঙ্গল আক্রমণ প্রতিরোধ ; (৩) সুলতানিকে একটা স্থায়ী রাজবংশ তৈরি করা, যা ইলতুৎমিস ভালো মতোই সামলেছিলেন।
ইলতুৎমিসের সার্থক উত্তরাধিকারী ছিলেন তাঁর মেয়ে সুলতানা রাজিয়া। দিল্লির মসনদে এই প্রথম ও শেষবার একজন নারী বসেছিলেন।
0 Comments